0 Item | Tk.0
1
Kat badam

অনেকেই মনে করেন, কাঠবাদামে অনেক চর্বি রয়েছে, যা শরীরের জন্য স্বাস্থ্যকর নয়। তবে অতিরিক্ত চর্বি স্বাস্থ্যের জন্য ভাল না হলেও, কাঠবাদাম নিয়ে এরূপ ধারণা প্রকৃতপক্ষে সঠিক নয়। কাঠবাদামে থাকা নানান খনিজ উপাদান ও ভিটামিন শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। স্বাদের দিক থেকেও কাঠবাদাম স্ন্যাকস হিসেবে খাওয়ার জন্য অত্যন্ত চমৎকার একটি খাবার।

কাঠবাদামের পুষ্টি উপাদান সমূহঃ

কাঠবাদামে রয়েছে মনোআনস্যাচুরেটেড ও পলিআনস্যাচুরেটেড অয়েল, ফলিক অ্যাসিড জিঙ্ক, ও প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট।এছাড়া কাঠ বাদামে যেসকল পুষ্টি উপাদান থাকে তা বিস্তারিত আলোচনা করা হলো। প্রতি ১০০ গ্রাম কাঠ বাদামে রয়েছে–

  • এনার্জি- ৫৭৮ কিলোক্যালরি
  • কার্বোহাইড্রেট- ২০গ্রাম
  • আঁশ- ১২ গ্রাম
  • ফ্যাট- ৫১ গ্রাম
  • প্রোটিন- ২২ গ্রাম
  • থায়ামিন- ০.২৪ মিলিগ্রাম
  • নিয়াসিন- ৪ মিলিগ্রাম
  • রাইবোফ্লেভিন- ০.৮ মিলিগ্রাম
  • প্যান্টোথেনিক অ্যাসিড- ০.৩ মিলিগ্রাম
  • ভিটামিন ই- ২৬.২২ মিলিগ্রাম
  • ভিটামিন বি৬- ০.১৩ মিলিগ্রাম
  • ক্যালসিয়াম- ২৪৮ মিলিগ্রাম
  • আয়রন- ৪ মিলিগ্রাম
  • ম্যাগনেসিয়াম- ২৭৫ মিলিগ্রাম
  • পটাশিয়াম- ৭২৮ মিলিগ্রাম

উপরের এ সকল তথ্য থেকেই বুঝা যায় কাঠ বাদামের পুষ্টিগুণ কত। তাই ডাক্তাররাও উপকারী এই খাদ্য বীজ খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

কাঠবাদামের উপকারিতাঃ

কাঠবাদামের উপকারিতা প্রচুর। এ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করতে হলে আমাদের ঢুকে যেতে হবে বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যায়।জটিল ব্যাখ্যায় না গিয়ে ,সহজ ভাষায় এর উপকারিতা তুলে ধরা হল-

১। মস্তিষ্কের কার্যকারিতা ও স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করে

কাঠ বাদামের উপকারিতা ব্যাপক থাকায় এটি বহু ভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। মস্তিষ্ক গঠনে কাঠবাদামের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর মধ্যে থাকা রিবোফ্লাবিন ও এল-সারনিটিন মস্তিস্কের কার্যক্রম ভালো রাখে। তাই গর্ভবতী মা এবং বাড়ন্ত শিশুদের কাঠবাদাম খাওয়া দরকার। রোজ সকালে কাঠবাদাম খেলে স্মৃতিশক্তি সহজে ভ্রষ্ট হয় না।

২। হার্টের জন্য ভালো

কাঠবাদামের মধ্যে থাকা মনো-আন স্যাচুরেটেট ফ্যাট, প্রোটিন ও পটাশিয়াম হার্টকে ভালো রাখতে সাহায্য করে। এর মধ্যে থাকা ভিটামিন-ই হৃদরোগের ঝুঁকি কমায় এবং  ম্যাগনেসিয়াম হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধে সাহায্য করে। এটি অ্যার্টারিকে ক্ষতিকর প্রদাহের হাত থেকেও সুরক্ষা দেয়। এক গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিদিন কাঠবাদাম খেলে হৃদযন্ত্র ভাল থাকে ও হার্ট এট্যাকের ঝুঁকি কমে।

৩। কোলেস্টেরল কমায়

কাঠবাদামের মধ্যে থাকা ভিটামিন ও ক্যালসিয়ামের উপস্থিতির জন্য এটি কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। একটি রিসার্চ এ দেখা গিয়েছে যারা প্রত্যেকদিন ১ টি করে কাঠবাদাম খেয়েছে তাদের কোলেস্টেরল ৪.৪% কমেছে এবং যারা প্রতিদিন দুটি করে খেয়েছে তাদের কমেছে ৯.৪%।

 ৪। উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে

কাঠবাদমে থাকা ফসফরাস উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। এর মধ্যে থাকা সোডিয়াম রক্তচাপের ওঠানামা নিয়ন্ত্রণ করে।

৫। ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করে

কাঠবাদাম ইনসুলিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। গবেষণায় বলা হয়, খাবারের পর কাঠবাদাম খাওয়া ইনসুলিনের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে।

৬। হাড় ও দাঁত ভালো রাখে

কাঠবাদামে থাকা ফসফরাস, মিনারেল ও ভিটামিন হাড়কে সুরক্ষা দেয়। ফসফরাস কেবল হাড় ও দাঁতকে মজবুতই করে না, এটি অস্টিওপরোসিস বা হাড় ক্ষয় হওয়া থেকেও সুরক্ষা দেয়।

৭। শরীরে শক্তি বাড়ায়

প্রতিদিন একমুঠো কাঠবাদাম শরীরে শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। এর মধ্যে থাকা ম্যাঙ্গানিজ, কপার ও রিবোফ্লাবিন শরীরে শক্তি জোগায়। এটি বিপাক প্রক্রিয়া ভালোভাবে কাজ করতেও সাহায্য করে।

৮। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়

কাঠবাদাম অ্যালকালাইন সমৃদ্ধ একটি খাবার। এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এর মধ্যে রয়েছে ভিটামিন-ই ও অনেক শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। যা দেহকে ব্রেন ক্যান্সার, ব্রেস্ট ক্যান্সার, ফুসফুসের রোগসহ বিভিন্ন ধরনের রোগের হাত থেকে সুরক্ষা দেয়।

৯। ত্বক সুন্দর ও উজ্জ্বল রাখে

ত্বকের যত্নে কাঠবাদাম এর গুরুত্ব অনেক। কাঠ বাদামের তেল হল প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার যা ত্বককে নমনীয় ও তুলতুলে রাখে। এই তেল দ্বারা নিয়মিত ম্যাসাজ করলে ত্বকে রক্ত সঞ্চালন বাড়ে যা ত্বককে সুস্থ রাখে। এতে চোখের নিচে কাল ছাপ দূর হয় এবং ত্বক উজ্জ্বল হয়। এছাড়াও কাঠবাদাম চেহারা থেকে বয়সের ছাপ দূর করতে সহায়তা করে।

১০। চুলের সুরক্ষা বজায় রাখে

কাঠ বাদামে আছে চুল বান্ধব মনো ফ্যাটি অ্যাসিড। আরও আছে ভিটামিন ই, এ, ডি, বি১, বি২ এবং বি৬ যা কিনা চুলকে নিয়মিত পুষ্টি দেয় এবং চুলের গোঁড়া শক্ত করে। তাছাড়া ফ্যাটি অ্যাসিড চুল কে সফট ও সিল্কি রাখতেও সাহায্য করে।

এছাড়াও কাঠবাদাম হজম শক্তি বৃদ্ধি, ওজন কমানো, চুলের খুশকি দূর করাসহ আরও অনেক উপকারে আসে।

কাঠবাদাম খাওয়ার নিয়মঃ

বিশেষজ্ঞদের মতে, কাঠবাদামের বাদামী আবরণে ট্যানিন নামক উপাদান থাকে যা পুষ্টি শোষণ করে নেয়। তাই কাঠবাদাম খাওয়ার আগে ছয় থেকে আট ঘন্টা পানিতে ভিজিয়ে রাখলে ভাল। এতে খোসা খুলে যায় এবং সহজে পুষ্টি বের হয়। তাই খোসা ছাড়ানো অবস্থায় কাঠবাদাম খেলে বেশি উপকারিতা মিলবে।

প্রতিদিন ১৫ গ্রাম-২০ গ্রাম কাঠবাদাম খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ভাল মনে করা হয়। কাঠবাদাম ভেজেও খাওয়া যায়। এতে তেমন কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়ে না। তবে কাঠবাদাম ভাজা হলে এতে পানির উপস্থিতি কমে যায়। ফলে পুষ্টি উপাদানগুলো জমাট বেঁধে থাকে। তবে এটি কোনো সমস্যা নয় উপকারিতা ঠিকই পাওয়া যায়।

কুড়মুড়ে স্বাদের ভাজা কাঠ বাদাম সেরা হেলদি স্ন্যাকস।অধিক উপকার পেতে অনেকে এর সাথে মধু মিলিয়েও খেয়ে থাকেন।

তবে নিয়মিত সঠিক পরিমানে কাঠবাদাম খেলে তা স্বাস্থ্যের অনেক উপকারে আসে। বিশেষ ভাবে, এটি আমাদের ব্রেনের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধিতে ব্যাপক ভূমিকা রাখে। তাই আমাদের সকলেরই উচিত ঘরে কাঠবাদাম রাখা। আপনি চাইলে ফ্রিজে কাঠবাদাম সংরক্ষণ করতে পারেন। এতে এর পুষ্টি গুনাগুণ নষ্ট হয় না। পরিবারের সবার যত্নে নিয়মিত কাঠবাদাম খাওয়ার অভ্যাস করাই যায়।

1 Comment

  1. porno August 13, 2022 Reply

    Thanks for sharing, this is a fantastic article. Want more. Clint Kusel

Leave a Comment

Your email address will not be published.