বর্তমান করোনাকালে মোটামুটি আমরা সকলেই উপলব্ধি করতে পারছি যে আমাদের ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালী হওয়া কতটা গুরুত্বপূর্ণ। যার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যত বেশি হবে সে তত ইফেক্টিভলি এসকল ভাইরাস জনিত রোগব্যাধি দ্রুত কেটে উঠতে পারবে। আর শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি বা ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালী করতে হলে আমাদের নিয়মিত কিছু স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে এবং স্বাস্থ্যকর জীবন-যাপন করতে হবে। এই কথা মাথায় রেখে আজকের লেখায় তুলে ধরা হল সেরা ৫টি প্রাকৃতিক উপাদান যা ভাইরাস জনিত রোগসহ অন্যান্য আরও নানা রোগ থেকে আমাদের শরীরকে সুরক্ষা দিবে। চলুন জেনে নেয়া যাক সেই উপাদানগুলো সম্পর্কে।
১। ত্রিফলা
আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে ত্রিফলা এর গুরুত্ব ব্যাপক। এটি মূলত ৩টি বিশেষ ফলের মিশ্রন। আমলকি, হরিতকি এবং বহেরা, এই ৩ ফল শুকিয়ে তাদের চূর্ণ একসঙ্গে মিশিয়ে তৈরি করা হয় ত্রিফলা। এতে একাধিক ভিটামিন এবং মিনারেল থাকে যা ছোট-বড় নানা রোগকে দূরে রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
নিয়মিত ত্রিফলা খাওয়া শুরু করলে দেহের পুষ্টিকর উপাদানের মাত্রা এতটা বেড়ে যায় যে তার প্রভাবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার দ্রুত উন্নতি ঘটে। ফলে ছোট-বড় রোগব্যাধির প্রকোপ কমে চোখের নিমেষেই। এমনকি নিয়মিত খালি পেটে এই আয়ুর্বেদিক চূর্ণটি খাওয়া শুরু করলে শরীরের এমন কিছু পরিবর্তন হতে শুরু করে যা ক্যান্সার সেল জন্ম নেওয়ার প্রক্রিয়ায় ব্যঘাত স্রিষ্টি করে। আর একবার যদি জন্ম নিয়েও ফেলে তাহলেও তার বৃদ্ধি দ্রুত আটকে দেয়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই এই মরণ রোগ ধারে কাছেও ঘেঁষতে পারে না।
২। অশ্বগন্ধা
অশ্বগন্ধা হচ্ছে এক প্রকার প্রাচীন আয়ুর্বেদিক ভেষজ। এর বহুবিধ উপকারিতার জন্য আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে একে ‘অত্যাশ্চর্য ভেষজ’ বলা হয়ে থাকে। প্রায় ৩০০০ বছর ধরে নানা রোগ নিরাময়ে আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় অশ্বগন্ধা সুনামের সাথে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। অনেকে একে ইন্ডিয়ান জিনসেং নামেও চিনে থাকে।
এটি এক প্রকার শক্তিবর্ধক ভেষজ। এটি শরীরের ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালী করতে অত্যন্ত কার্যকরী। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় জানা গেছে যে, অশ্বগন্ধায় ক্যানসার বিরোধী উপাদান রয়েছে যা শরীরে ক্যান্সার সংক্রমিত হওয়া থেকে রক্ষা করে।
৩। মরিঙ্গা
সজনে গাছের বৈজ্ঞানিক নাম হচ্ছে মরিঙ্গা। পুষ্টি বিজ্ঞানীরা মরিঙ্গাকে ‘সুপার ফুড অব নিউট্রিশন’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। এতে বিদ্যমান পুষ্টি উপাদানগুলো প্রায় ৩০০ রোগ নিরাময়ে সক্ষম। এটি শরীর থেকে বিষাক্ত দ্রব্য, ভারী ধাতু অপসারণ করে দেয়। মরিঙ্গা শরীরের প্রতিরোধক ব্যবস্থা শক্তিশালী করে নানা রোগব্যাধি থেকে শরীরকে রক্ষা করে। ক্যান্সার রোগীদের শরীরে রেডিয়েশন ও কেমোথেরাপিতেও মরিঙ্গা অনেক উপকারে আসে।
৪। চিয়া সীড
দুনিয়ার সবচেয়ে স্বাস্থ্যকর খাবারগুলোর মধ্যে একটি হল চিয়া সীড বা চিয়া বীজ। এজন্যই একে সুপার ফুড বলা হয়। এটি মূলত এক ধরণের শস্য দানা। এতে প্রচুর পরিমাণে এন্টি-অক্সিডেন্ট, ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড, ফাইবার, ভিটামিন ও মিনারেল রয়েছে যা দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে সার্বিক ভাবে শরীরকে সুস্থ রাখে।
৫। কাঠবাদাম
নানাবিধ স্বাস্থ্য গুণের জন্য কাঠবাদাম অত্যন্ত সুপরিচিত। সুস্থ থাকার জন্য ডাক্তাররাও প্রতিদিন কাঠবাদাম খাওয়ার উপদেশ দিয়ে থাকেন। কাঠবাদামকে ভিটামিন ও মিনারেল এর পাওয়ার হাউস বলা হয়ে থাকে কারণ এতে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন ও মিনারেল রয়েছে। কাঠবাদাম ব্রেইন ডেভেলপমেন্ট এর জন্য অত্যন্ত কার্যকর। এটি হার্টের সুরক্ষায়ও অনেক উপকারে আসে। এটি সার্বিক ভাবে শরীরের ইমিউন সিস্টেম বুস্ট করে নানাবিধ রোগব্যাধি থেকে শরীরকে রক্ষা করে। সুস্থ ও স্বাস্থ্যকর জীবন-যাপনের জন্য কাঠবাদাম হতে পারে নিত্য দিনের সাথী।
পরিশেষে
বর্তমানে নিজেকে ও নিজের পরিবারকে সুরক্ষিত রাখতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পাশাপাশি ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালী করার দিকেও নজর দিতে হবে। তবেই তুলনামূলক কম কষ্টে বর্তমান পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠা সম্ভব। সেজন্য ভরসা রাখতে পারেন ন্যাচারালস ত্রিফলা চূর্ণ, অশ্বগন্ধা, মরিঙ্গা, চিয়া সীড ও প্রিমিয়াম রোস্টেড কাঠবাদামে। যা অন্যান্য উপকারের পাশাপাশি আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে স্বাস্থ্যকর জীবন যাপনে সহায়তা করবে।
khub valo post and onek benifited. keep sharing