☘️ বিস্ময়কর ঔষধি গুণসম্পন্ন ত্রিফলা- আমলকি, হরতকি ও বহেরার অত্যাশ্বর্য ভেষজ মিশ্রণ। স্বাস্থ্য রক্ষায় যা এখনো প্রাচ্যের মেডিসিন থেকে অনেক বেশি কার্যকর। আর তাই বিশ্বব্যাপী চিকিৎসক, বিজ্ঞানী, গবেষকগণ ত্রিফলাকে দিয়েছেন ‘মাদার অব অল হার্বস’ এর স্বীকৃতি। ত্রিফলার ব্যবহারের গুরুত্ব বুঝাতে ভারতীয় প্রবাদে বলা হয়েছে – যার ঘরে ত্রিফলা আছে, তার মায়ের যত্নের প্রয়োজন নেই।
কখনো ভেবে দেখেছেন কি? প্রাচীনকালের/আমাদের আগের জেনারেশনের মানুষগুলো কেন এত বেশি সুস্থ, সবল আর সুঠাম দেহের অধিকারী ছিল? তাদের না ছিল কোনো আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি, না ছিল এ যুগের সবজান্তা শমসের গুগল মামার সহযোগিতা। তাহলে কিভাবে তারা এতটা সুস্থ, সবল আর নীরোগ থাকত সেটা জানতে পারলেই আমরাও উপভোগ করতে পারব সুস্থ দেহ, সতেজ মন, কর্মব্যস্ত সুখি জীবন ।
প্রাচীনকালের মানুষগুলো কিছু নিয়মের চর্চা করত এবং তাদের খাদ্যে এমন কিছু উপাদান থাকত যেগুলো তাদেরকে দিত প্রাণ চাঞ্চল্যে ভরপুর সুস্থ জীবন। বহুল ব্যবহৃত, কার্যকর ও জনপ্রিয় বিধানগুলোই পরবর্তীতে আয়ু (জীবন), বেদ (বিধান) আয়ুর্বেদ শাস্ত্র হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। প্রায় পাঁচ হাজার বছর ধরে জনপ্রিয় এবং বিশ্বব্যাপী ব্যাপকভাবে সমাদৃত এই আয়ুর্বেদ শাস্ত্রের অন্যতম আবিষ্কার ত্রিফলা। আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে বলা হয়েছে, খাদ্যদ্রব্যের আংশিক বা অসম্পূর্ণ হজম বা বিপাকের (Metabolism) ফলে শরীরে যখন ক্ষতিকর এবং বিষাক্ত বস্তু (আমা) উৎপন্ন হয়, শরীরের সকল অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের কার্যক্ষমতা ব্যাহত হয়। বিজ্ঞানীদের অসংখ্য গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে এই ‘আমা’ শরীরের মূল সারবস্তুগুলোর (বাতা, পিত্ত ও কাফা) ভারসাম্য নষ্ট করে শরীরে রোগব্যাধি সৃষ্টি করে। বাতা, পিত্ত, কাফার ভারসাম্যহীনতাই মানব দেহের রোগ সৃষ্টির মূল কারন। এই ৩টির ভারসাম্য বজায় রাখতে ত্রিফলার জুড়ি নেই।
ভিটামিন সি এর রাজা আমলকীতে রয়েছে পেয়ারার চেয়ে ৩ গুণ, কাগজি লেবুর চেয়ে ১০ গুণ, কমলালেবুর চেয়ে ১৫-২০ গুণ, আপেলের চেয়ে ১২০ গুণ, আমের চেয়ে ২৪ গুণ এবং কলার চেয়ে ৬০ গুণ বেশি ভিটামিন সি। এছাড়াও আমিষ, চর্বি, ক্যালসিয়াম, লৌহ, খনিজ, শর্করা, মিনারেলস কি নেই আমলকিতে?
হরিতকীতে রয়েছে ট্যানিন,অ্যামিনো অ্যাসিড।
বহেড়ার মধ্যে অনেক যৌগ ও পুষ্টি উপাদান রয়েছে যা মানব দেহের জন্য খুবই কার্যকর। যেমন Sitsterol, Galic Acid, Galloyl Glucose, Fatty Acid, Protien, Oxalic Acid,Tannin, Palmitic Acid,Oleic Acid, Linoeic Acid, Galactose, Ethyl Gallate. এছাড়াও রয়েছে ভিটামিন, মিনারেলসহ অসংখ্য উপকারী উপাদান। একসাথে ব্যবহারে এদের গুণাগুণ হাজার গুণ বেড়ে যায় এই ধারণা থেকেই ত্রিফলার উৎপত্তি।হাজারো পুষ্টি উপাদান ঠাসা ত্রিফলার কিছু উপকারিতা সংক্ষেপে জেনে নেই…
1. প্রতিদিন ত্রিফলা নিন, ক্যান্সার রুখে দিন:
ত্রিফলায় থাকা গ্যালিক অ্যাসিড ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াই করে। এটি হলো এন্টি ক্যান্সার। বাংলাদেশে প্রতি বছর নতুন করে ১৫,০০০ নারী স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়। এদের মধ্যে ৭০০০ মৃত্যুবরণ করে। চল্লিশোর্ধ মহিলাদের স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি বেড়ে যায়। মায়ের স্তন ক্যান্সার থাকলে মেয়েরও স্তন ক্যান্সার হওয়ার সম্ভবনা বেড়ে যায়।৩ ২০১৫ সালে ক্যান্সার সেলের গ্রোথ এবং তার উপর ত্রিফলার প্রভাব সম্বর্কে একটি গবেষণা থেকে জানা যায় নিয়মিত খালি পেটে এই আয়ুর্বেদিক চূর্ণটি সেবন করলে শরীরের ভিতরে এমন কিছু পরিবর্তন হতে শুরু করে যার ফলে ক্যান্সার সেল জন্ম নেওয়ার সুযোগই পায় না। আর একবার যদি জন্ম নিয়েও ফেলে তাহলে তার বৃদ্ধি আটকে যায়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই এই মরণ রোগ ধারে কাছেও ঘেঁষতে পারে না। আরেকটি স্টাডিতে প্রমাণিত হয়েছে কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধেও ত্রিফলা বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
2. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখে:
ত্রিফলায় থাকা আমলকীর মধ্যে যে ক্রোমিয়াম থাকে, তা অগ্ন্যাশয়ের জন্য খুবই উপকারী। ফলে ইনসুলিন এবং শর্করার মাত্রাও সঠিক পরিমাণে বজায় থাকে। যা ব্লাড সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রণে রেখে ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।
3. গ্যাস্ট্রিক সমস্যার সমাধান করে:
ত্রিফলা গ্যাস্ট্রিক সমস্যার সমাধানে খুবই কার্যকর। ত্রিফলায় থাকা আমলকি হজমে সাহায্য করে ও স্টমাক অ্যাসিগে ব্যালেন্স বজায় রাখে। গবেষণায় দেখা গেছে, ত্রিফলা গ্যাস্ট্রিক ও আলসার হওয়ার প্রবণতা অনেক কমিয়ে দেয়।
4. যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধি করে:
ইমাম গাজ্জালী (রহ.) তার রচিত ‘এহইয়াউল উলুম’ গ্রন্থে মানুষের যৌন শক্তি বৃদ্ধির যে চারটি উপাদানের কথা উল্লেখ করেন তার মধ্যে ত্রিফলা অন্যতম। প্রজননতন্ত্রের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধিতে ত্রিফলা খুবই উপকারী। এটি প্রজনন অঙ্গগুলোর pH লেভেল নিয়ন্ত্রণ করে, প্রজনন অঙ্গকে শক্তিশালী করে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ত্রিফলা পুরুষের শুক্রাণু বৃদ্ধি করে এবং মহিলাদের মাসিক চক্র নিয়মিত করে। তাই প্রজননতন্ত্রের সমস্যায় ত্রিফলার ব্যবহার খুবই ফলপ্রসূ।
5. প্রেশার নিয়ন্ত্রণ করে:
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা তথ্য অনুযায়ী বিশ্বে ১৫০ কোটি লোক উচ্চ রক্তচাপে ভুগছে। প্রতি বছর ৭০ লাখ মানুষ পৃথিবী থেকে বিদায় নিচ্ছে। দেশে ১০-২০ শতাংশ মানুষ উচ্চ রক্তচাপে ভুগছে। এ রোগের কারনে মস্তিষ্কের রক্তক্ষরণ, হার্ট আ্যাটাক, কিডনি বিকল ও চোখের রেটিনা নস্ট হয়ে যেতে পারে। ত্রিফলার লাইনোলিক অ্যাসিড শরীরে প্রবেশ করা মাত্র সহজেই রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসতে পারে।
6. কিডনি সবল রাখে:
বর্তমানে দেশে কিডনি রোগীর সংখ্যা প্রায় দুই কোটি। ২০১৮ সালে অক্টোবরে প্রকাশিত ব্রিটিশ সাময়িকী বলা হয় বাংলাদেশে কিডনি রোগে আক্রান্ত হয়ে ২০১৬ সালেই ১৯ হাজার ৮০০ মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। ২০৪০ সালে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াবে ৪৪ হাজার ২৫০ জন। আর্ন্তজাতিক মান অনুযায়ী প্রতি ৫০ হাজার লোকের জন্য ১ জন নেফ্রোলজিস্ট থাকা দরকার। সেখানে আমাদের দেশে নেফ্রোলজিস্ট আছে মাত্র ১৭০ জন অর্থাৎ প্রতি ১০ লাখ মানুষের জন্য ১ জন নেফ্রোলজিস্ট (মোট জনসংখ্যা ১৭ কোটি ধরে)। কিডনি প্রতিস্থাপন করতে পারেন এমন চিকিৎসক আছেন মাত্র ১৫ জন। এছাড়া প্রতি বছর নতুন করে ৩৫০০০ মানুষের ডায়ালাইসিস দরকার হয়। যেখানে ৪৩ টি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ডায়ালাইসিস এর জন্য শয্যা আছে মাত্র ৫৭০ টি। ৯০ শতাংশ রোগী ডায়ালাইসিস করাতে পারে না। আর যারা শুরু করে তাদের মধ্যে প্রায় ৭০ শতাংশ এক বছরের মধ্যে ছেড়ে দেয়। এ রোগের চিকিৎসা অত্যন্ত ব্যয়বহুল। তাছাড়া প্রয়োজনের তুলনায় চিকিৎসকের সংখ্যা খুবই নগণ্য । এমন কঠিন বাস্তবতায় কিডনি রোগ প্রতিরোধে ত্রিফলা এক চমৎকার উপায়। কারন ত্রিফলা আমাদের রেচনতন্ত্রের (কিডনি) কার্যাবলিতে সহায়তা করে। ফলে অন্ত্র পরিমাণমতো পানির সরবরাহ পায়, ত্রিফলা মূত্র সংবহনতন্ত্রের কর্মক্ষমতা বাড়ায়। অন্ত্র, মূত্র সংবহনতন্ত্র ও রেচন তন্ত্রের ভারসাম্যপূর্ণ স্বাভাবিক কার্যক্রমের জন্য দেহ শীতল থাকে এবং উচ্চ তাপমাত্রায় হিট স্ট্রোক হওয়ার ঝুঁকি কমে।
7. কোষ্ঠকাঠিন্য ও পাইলস সমস্যা সমাধান করে:
ত্রিফলাতে রয়েছে অ্যানথ্রাকুইনোন, যা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। বেশ কিছু কেস স্টাডিতে একথা ইতোমধ্যেই প্রমাণিত হয়েছে, ত্রিফলা শুধু পরিপাকতন্ত্রে হজমশক্তি বৃদ্ধি করে না বরং খাদ্যের উপাদানগুলোর শোষণেও সহায়তা করে। বাওয়েল মুভমেন্টের উন্নতি ঘটানোর মধ্যে দিয়ে কনস্টিপেশনের মতো রোগের চিকিৎসায় এই হার্বাল মিশ্রনটি বিশেষ ভূমিকা পালন করে। নিয়মিত সেবনে ত্রিফলা কোষ্টকাঠিন্য দূর করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে সৃষ্ট রোগ পাইলস বা ফিস্টুলার ঝুঁকি কমায়। শুধু তাই নয়, কোলোনকে পরিশুদ্ধ করার মধ্যে দিয়ে আরও নানা ধরনের রোগের আশঙ্কা কমাতেও ত্রিফলার বিকল্প হয় না বললেই চলে। ১২
8. লিভার ভালো রাখে:
বাংলাদেশে লিভার রোগের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে ভয়ংকর এক তথ্য দিয়েছে হেপাটোলজি সোসাইটি । তারা বলেছে দেশের প্রতি ৩ জনের মধ্যে ১ জন লিভার রোগে আক্রান্ত । সে হিসাবে দেশের 16 কোটি মানুষের মধ্যে প্রায় ৫ কোটির বেশি মানুষ এ রোগে আক্রান্ত । আরও ভয়ংকর ব্যাপার হলো অনেক চিকিৎসক জানেন না, এ রোগের চিকিৎসা কিভাবে করতে হয় । এত বিপুল সংখ্যক রোগীর বিপরীতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সংখ্যা ১০০ জনেরও কম। মানে প্রতি ২০ লাখ মানুষের জন্য ১ জন চিকিৎসক। লিভারের সমস্যা সমাধানে এটা অত্যান্ত কার্যকর।
9. রক্তসংবহন তন্ত্রের জন্য উপকারী:
এটি আমাদের রক্তসংবহনতন্ত্রের স্বাভাবিক কার্যকলাপ সাধনের খুবই উপকারী ভূমিকা পালন করে। এটি রক্ত শোধনের পাশাপাশি হৃৎপিণ্ডের কর্মক্ষমতাও বাড়ায়। এটি রক্তে ব্যাকটেরিয়া ও পরজীবীর পরিমাণ কমায় এবং এদের মাধ্যমে সৃষ্ট সম্ভাব্য রোগ প্রতিরোধ করে। এটি আমাদের দেহে কোলেস্টেরল, এলডিএল (LDL) এবং ক্ষতিকর লিপিডের পরিমাণ কমায় এবং আমাদের হৃদরোগের ঝুঁকিমুক্ত রাখে। এটি আমাদের সব শরীরে রক্ত সরবরাহ বৃদ্ধি করে, দেহের সব কোষ ও কলায় প্রয়োজনীয় শক্তি সরবরাহ করে।
10. হৃদ রোগ নিয়ন্ত্রণ করে :
বিশ্বের ১ নম্বর ঘাতক ব্যাধি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে প্রতি বছর ১ কোটি ৭৫ লাখ মানুষ মৃত্যু বরণ করে। আশংকা করা হচ্ছে ২০৩০ সাল নাগাদ এ সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াবে আড়াই কোটিতে। ৫০-৬০ বছর বয়সীদের হৃদরোগে আক্রান্ত হবার সম্ভবনা খুব বেশি।
11. ওজন কমাতে সাহায্য করে:
অতিরিক্ত ওজনের কারণে যদি চিন্তায় থাকেন, তাহলে ডায়েট কন্ট্রোলের পাশাপাশি আপনার প্রথম পছন্দ হওয়া উচিত ত্রিফলা চূর্ণ। কারণ নিয়মিত এই প্রাকৃতিক উপাদানটি গ্রহণ করলে বাওয়েল মুভমেন্টের উন্নতি ঘটে। সেই সঙ্গে হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটার কারণে শরীরে মেদ জমার আশঙ্কা একেবারে কমে যায়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ওজন কমতে শুরু করে।
12. খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়:
শরীরের কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ার সাথে সাথে হার্টে রক্ত সরবরাহকারী আর্টারিগুলি বন্ধ হয়ে যেতে শুরু করে। ফলে পর্যাপ্ত পরিমাণ অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্ত না পাওয়ার কারণে হার্ট দুর্বল হয়ে পরে। সেই সঙ্গে হঠাৎ করে হার্ট অ্যাটাক হওয়ার আশঙ্কাও বৃদ্ধি পায়। জার্নাল অব ফার্মাসিউটিকাল সোসাইটি অব জাপানে প্রকাশিত একটি স্টাডি অনুসারে ত্রিফলায় উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট একদিকে যেমন এলডিএল বা খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়। তেমনি হার্টের ভিতরে যাতে কোন ভাবেই প্রদাহ সৃষ্টি না হয়, সেদিকেও খেয়াল রাখে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই যেকোন ধরণের করনারি আর্টারি ডিজিজে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বহুলাংশে হ্রাস পায়।
13 শ্বাসকষ্ট দূর করে:
ত্রিফলা আমাদের শ্বাসনালী থেকে শ্লেষ্মা নিঃসরণ করে এবং আমাদের শ্বাসনালীর কর্মক্ষমতা স্বাভাবিক রাখে। এটি দেহে ও শ্বাসনালীতে অ্যালার্জির প্রকোপ কমায়, ফলে অ্যাজমা রোগে খুবই উপকারী ভূমিকা পালন করে। এটি আমাদের সাইনাস থেকে শ্লেষ্মা বের করে দেয়, ফলে সাইনোসাইটিসজনিত মাথাব্যথা প্রতিহত করে।
14. দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখে:
আমলকির রস দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। এছড়াও চোখের বিভিন্ন সমস্যা যেমন চোখের প্রদাহ, চোখ চুলকানি বা পানি পড়ার সমস্যা থেকে রেহাই দেয়। আমলকি চোখ ভাল রাখার জন্য উপকারী। এতে রয়েছে ফাইটো-কেমিক্যাল যা চোখের সঙ্গে জড়িত ডিজেনারেশন প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। গরম পানিতে সারা রাত রাখা ভিজিয়ে ১-২ চামচ ত্রিফলা গুঁড়ো, পরদিন সকালে পানিটা ছেঁকে নিয়ে ভালো করে চোখ পরিষ্কার করুন। এইভাবে নিয়মিত চোখের পরিচর্যা করতে পারলে দেখবেন দৃষ্টিশক্তির উন্নতি ঘটতে সময় লাগবে না। সেই সঙ্গে চোখের সংক্রমণে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাও যাবে কমে। ত্রিফলার পেস্ট চোখের ফোলা কমাতে খুবই কার্যকর।
15. বয়সের ছাপ প্রতিরোধ করে:
ত্রিফলা সমগ্র শরীরে রক্ত সরবরাহ বৃদ্ধির মাধ্যমে সারাদেহে পুষ্টি যোগায়। ত্রিফলায় থাকা এন্টি অক্সিডেন্ট, বুড়িয়ে যাওয়া ও সেল ডিজেনারেশনের অন্যতম কারন ফ্রি- র্যাগডক্যালস ধ্বংশ করে, মৃত কোষ কমায়। ত্রিফলার নিয়মিত ব্যবহার ত্বকের বলিরেখা,বাধ্যর্কের ছাপ, মলিনতা দূর করে চেহারায় লাবণ্য ধরে রেখে আপনাকে করে তোলে আকর্ষণীয় ও তারুণ্যদীপ্ত।
16. চুলের উজ্জ্বলতা বাড়ায়:
আপনার পাতলা হতে থাকা চুল অথবা হঠাৎ উঠতে থাকা ব্রণ হচ্ছে আপনার দেহের আর্তচিৎকার! শরীর যখন প্রয়োজনীয় কিছু চেয়েও পায় না তখন দেখা দেয় এসব সমস্যা। নামী ব্র্যান্ডর দামী শ্যাম্পু, সাবান বা ক্রিম ব্যবহার করে কোম্পানিগুলোর মুনাফার সূচক বাড়ালেও আপনার কাজের কাজ কিছুই হয়নি। কারন যতক্ষণ পর্যন্ত মূল সমস্যার সমাধান না হচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত আপনি এসবের হাত থেকে নিস্তার পাবেন না। নিয়মিত ত্রিফলা সেবনে দেহ বিষমুক্ত হয়, হালকা ও প্রাণবন্ত হয়। ত্রিফলায় থাকা ভিটামিন সি চুলের গোড়ায় পুষ্টি জোগায়। চুলের অকাল পক্কতা দূর করে। ত্রিফলার পেস্ট বানিয়ে হেয়ার প্যাক হিসেবে নিয়মিত ব্যবহার করলে আপনি পাবেন মেঘ কালো লম্বা চুল ।
17. বাত ব্যাথার প্রকোপ কমায়:
ত্রিফলায় উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং পলিফেনল শরীরে প্রবেশ করার পর প্রদাহ কমাতে শুরু করে। আর একবার ইনফ্লেমেশন কমে গেলে স্বাভাবিকভাবেই জয়েন্ট পেন কমতে থাকে। সেই সঙ্গে শরীররে সচলতাও বৃদ্ধি পায়। তাই এমন ধরনের কোনও রোগে যদি ভুগতে থাকেন, তাহলে নিশ্চিন্তে একবার এই প্রাকৃতিক উপাদানকে কাজে লাগিয়ে দেখতে পারেন।
18. ক্ষত সেরে যায় চোখের নিমেষে :
অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটারি এবং অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদানে টাসা হওয়ার কারণে এই মিশ্রনটি খাওয়া শুরু করলে শরীরের এমন কিছু পরিবর্তন হতে শুরু করে যে ক্ষত সারতে সময় লাগে না। এই কারণেই তো চোট বাচ্চাদের নিয়মিত এই আয়ুর্বেদিক মিশ্রনটি খাওয়ানোর পরামর্শ দেওয়া হয়।
এ উপমহাদেশে শ্রেষ্ট বেনারসি জাতের আমলকি, উৎকৃষ্ট মানের বহেড়া ও হরীতকির দিয়ে তৈরি হয় ন্যাচারালস ত্রিফলা।
ন্যাচারালস ত্রিফলা এখানে ক্লিক করুন: ন্যাচারালস ত্রিফলা
Ata kawar system ki?